জন্মদিন ২০২৪
আমি বিখ্যাত কোন ব্যক্তি নই। এমনকি পরিচিত মহলে জনপ্রিয়ও নই। কিছুটা একরোখা আর জেদি টাইপের মানুষ। বেশিরভাগের কাছেই আমি নিতান্তই বোরিং একটা চরিত্র। নিজের জন্মদিনে কেউ শুভেচ্ছা জানালে এখন আর পুলকিত হইনা। যেহেতু নানা জায়গায় ফর্ম পূরণ করতে গেলে জন্ম তারিখ দেয়া লাগে, তাই তারিখটা ভুলিনা। কিন্তু সচেতনভাবে চেষ্টা করি এটা লুকিয়ে রাখার। অহেতুক উচ্ছাস ভালো লাগে না।
তারপরেও সবার আগে আমার কন্যা আর স্ত্রী জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। একটা ছোট কেক এনেছে। আলিনা সেটা সাথে সাথেই কেটে খেয়ে ফেলেছে। যদিও সে প্রথমে আমাকেই কাটতে বলেছিল। কারন এটাই নাকি নিয়ম।
আমাকে এরপরেও এক-দুজন মেসেজ করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। বাংলালিংক, এয়ারটেল, সিটি ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক থেকেও মেসেজ পেয়েছি। কর্পোরেট অটোমেটেড মেসেজ। তারপরেও কিছুটা ভালো লেগেছে।
২০২৩-২০২৪ আসলে খুব ভালো যায়নি। অনেক খারাপ সময় পার করতে হচ্ছে। মাঝে মাঝে ভেঙে পড়তে গিয়েও আবার শিরদাঁড়া খাড়া রাখতে হয়েছে।
বিশেষ করে "প্যানিক এটাক" নামে একটা যন্ত্রনায় আক্রান্ত হয়েছি অনেকবার বিগত ছয় মাসে। প্যানিক এটাক আমার কোনকালেই ছিলো না। এটা শুরু হয়েছে দীর্ঘ সময় ভারতে থাকার সময়। দীর্ঘ মেয়াদি বিষন্নতায় আক্রান্ত ছিলাম। সেই সাথে প্যানিক এটাক আমাকে বেশ কাবু করে ফেলেছিল। হটাৎ করে মনে হত সব অন্ধকার হয়ে আসছে, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, আর কোনোদিন মনে হয় দেশে ফেরত যেতে পারব না। প্রচন্ড অস্থির লাগত...।
নিজস্ব পরিকল্পনার বাইরে চলাটা আমার এই প্যানিক এটাককে বাড়িয়ে দিয়েছিল বেশ কয়েকগুণ। এখন আপাতত ভাল আছি। আবার লিখতে পারছি, নিজের কাজ করতে পারছি।
নাহ, সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যাইনি। রোগের কার্যকারন যেহেতু জানি তাই সমাধান বের করার চেষ্টা করেছি। হিউম্যান সাইকোলজি একটা জটিল এবং মজার বিষয়। মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে বিভিন্ন ঘটনায় সেটা আমাকে সবসময়ই ভাবায়। নিজে এই নিয়ে অল্পবিস্তর পড়াশোনাও করি। তাই চেষ্টা করেছি নিজেই কিভাবে শিরদাঁড়া সোজা করে আবার হাঁটতে পারি।
সমস্যা হচ্ছে, চাহিদা। অন্যদের কাছে আমার খুব বেশি চাহিদা না থাকলেও, সবারই কিছু না কিছু চাহিদা থাকে আমার কাছে। ২০২৪ আমাকে শিখিয়েছে কিভাবে শক্তভাবে "না" শব্দটা বলতে হয়। এই না বলতে না পারলে আমাকে আরো গভীরে হারিয়ে যেতে হবে।
কারন, দিনশেষে কেউ আমাকে একবারও জিগ্যেস করে না, আপনি কেমন আছেন?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন