না

কিছু মানুষ না শব্দটা শুনতে পারেন না। বা শুনেও না শোনার ভান করেন। বাচ্চার স্কুলে নিয়মিত যাওয়া-আসার সুবাধে কিছু মানুষের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে। এরা মাঝে মধ্যে আমাকে অদ্ভুত কিছু অনুরোধ করেন। কারো পাসপোর্টের ফর্ম কিংবা ভিসার ফর্ম ফিলাপ করে দেয়া টাইপের। আমি প্রথম দিকে "তারা পারেন না" এই মর্মে করে দিতাম। ইদানিং দেখলাম, তারা নিজের কাজ বাদেও অন্যদের কাজও আমাকে দিয়ে করিয়ে নিতে চাচ্ছেন।

মূলত এইটা আমার কাজ না। আমি আমার প্রফেশন আর লেখালেখি নিয়ে প্রচুর ব্যস্ত থাকি। এর মধ্যে বাচ্চাকে সময় দেয়া, রান্না করা, বাজার করা ইত্যাদি কাজও আমাকে করতে হয়। সেখানে অন্য কারো জন্য ভদ্রতার খাতিরে ফ্রি সময় বের করা আমার জন্য খুব কষ্টের।

তো একটা মাত্র উপায়, সেটা হচ্ছে না বলে দেয়া। এই "না" বলতে না পারলে আমাকে বেশ ভুগতে হয়। আবার কিছু মানুষকে না বলার পরও তারা বুঝতে পারেন না। অথবা বুঝতে চান না। 

শুধু আমি পারি বলেই যে কোন কাজ করতে আমি বাধ্য নই। তাই আমি এদের এড়িয়ে চলা শুরু করেছি। যে সময়টা আমি সোশ্যালাইজিং নামক একটা অদ্ভুত জিনিস করতাম সেটা এই মাস থেকে বাদ দিয়েছি। এখন সময় পেলেই আমি বাসায় বসে বই পড়ি অথবা নিজে নিজে একা ঘুরতে বের হই। 

যথেষ্ট নেটওয়ার্কিং হয়েছে, এবার থামতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটা কথা খুব প্রযোজ্য, বান্দরকে লাই দিলে সে মাথায় উঠে বসে। নতুন কারো সাথে পরিচিত হওয়াটা আমার কাছে এখন একটা আতংকের নাম।

আমার এক বন্ধু আমাকে একবার উপদেশ দিয়েছিল, যে কাজটা তুই ভালো পারিস সেটা কখনো ফ্রিতে করে দিবি না, বাঙ্গালিকে তো আরো বেশি করে না।

আমি নিভৃতচারী মানুষ, সেভাবেই থাকাটা আমার জন্য বাঞ্ছনীয়। আমি ফ্রিতে কারো কাছ থেকে কিছু আশা করি না, আমি চাই আমার কাজের সময় অন্যরাও আমাকে একইরকম ভাবে বিরক্ত না করুক।

প্রযুক্তির ব্যবহার যদি আপনি শিখতে না পারেন তবে ঝরে যাবেন। সামান্য কম্পিউটারের কাজ যেটা সবার জানার কথা এই যুগে এসে, সেটাও ঢাকা শহরের মত জায়গায় বসে অন্যকে দিয়ে করিয়ে নেয়ার মানে আপনি যুগের সাথে তাল মিলাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

আপনার জন্য সামনে আরো কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।


মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন