বাইক সার্ভিসিং করতে গিয়েছিলাম। সাধারনত আমি মেকানিককে সমস্যার কথা বলে ওয়েটিং প্লেস এ গিয়ে বসে থাকি। আমার থেকে সে তার কাজ ভালো বোঝে, তাকে বুদ্ধি দেবার কোন দরকার নেই। আজকে অস্থির লাগছিলো দেখে সার্ভিসিং এর জায়গায় গিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলাম। দেখছিলাম কিভাবে কি করে! আরো কিছু লোকজন এসেছে তাদের বাইক সার্ভিস করতে। এর মধ্যে একজন আবার আমার জন্য নির্ধারিত মেকানিকের সাথে এসে গল্প জুড়ে দিলো। গল্পের মূল বিষয় টক অব দ্যা কান্ট্রি আছিয়া ধর্ষন এবং আসামীদের পরিণতি কি হওয়া উচিৎ। কথায় কথায় সে বলল এই রাষ্ট্র কোন কাজের না, এখন জামায়াতের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দেয়া উচিৎ। আফগানিস্তানের মত শরীয়া আইন করা হলে এইরকম গর্হিত কাজ ঘটত না। আমি মনোযোগ দিতে না চাইলেও অনেকক্ষন শুনলাম। কিছু বললাম না।
আমি লোকজনের সাথে কথা বলতে পছন্দ করি না। আমার কথা বেশিরভাগের পছন্দ হয় না। কারন সবাই যখন ঘটনা এক দৃষ্টিকোন থেকে দেখে আমি ঘটনা দশদিক থেকে দেখতে পছন্দ করি। এই ছেলে জামায়াতের বা শিবিরের হতে পারে। তাতে অবশ্য আমার কিছু যায় আসে না। জেনজির বৃহৎ একটা অংশ জামায়াত প্রেমী।
সে বেশ কয়েকবার আমার দিকে তাঁকাল তার কথার ভ্যালিডেশনের আশায়। বারংবার, সে ধর্ষনের জন্য সাথে সাথে মৃত্যুদন্ড এবং জামায়াতের হাতে ক্ষমতা দেয়ার কথা বলছিল। শেষ পর্যন্ত তাকে আমি জিজ্ঞেস করলাম শরীয়া আইন নিয়ে সে কিছু জানে নাকি? শরীয়া আইনে একজন মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে এটা প্রমান করতে হলে কি সাক্ষ্য লাগবে সেটা কি সে জানে? আর শরীয়া আইনে শাস্তি কে পাবে সেটা সম্পর্কে তার ধারনা আছে নাকি?
ব্যক্তিটি অপারগতা জানাল। সে শরীয়া আইন সম্পর্কে খুব বেশি জানে না। এরপর জিজ্ঞেস করলাম, আফগানিস্থানের বর্তমান অবস্থা, তাদের ব্যাংকিং, আমদানি রপ্তানি, চিকিৎসা, খাদ্যের মজুদ ইত্যাদি নিয়ে তার কোন আইডিয়া আছে কিনা? এই যুবক সেটাও খুব ভালো জানে না।
সে অনেক কিছুই জানে না, কিন্তু সে একটা মতামত প্রচার করছে এই দেশে অন্যদেশের মত আইন হলে ভালো হবে। এদের আমি খুব সাধারণ মানুষ হিসেবে ধরি। এটা আমাদের দেশের আর দশটা সাধারণ মানুষের মতামত। আমি ফেইসবুক খুললেই হরহামেশা এই ধরনের সাধারণ লোকজন দেখি। যে কোন ইস্যুতে এরা খুব দ্রুত মতামত দিয়ে দেয়। কারন চিন্তাভাবনা করাটা খুব কষ্টের একটা কাজ। এরা যে কারো কমেন্টের নিচে গিয়ে গালাগালি দিয়ে আসে। অপরিচিত লোকের সাথে বেহুদা তর্কে জড়ায়। সমাজ, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি এহেনও বিষয় নাই যেটা তারা জানে না।
ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট বা মৃত্যুদন্ড বড়সড় একটা জাজমেন্ট। এর ভাল খারাপ উভয় দিকই আছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে আমরা যারা বড় হয়েছি। প্রতিনিয়ত দেখেছি অপরাধীদের বুক ফুলিয়ে আদালত প্রাঙ্গন ত্যাগের দৃশ্য, তাদের কাছে মনে হতে পারে প্রকাশ্যে মৃত্যদন্ড দিলেই বাংলাদেশে খুন, ধর্ষন, কালোবাজারি, প্রশ্নফাঁস, খাদ্যে ভেজাল সব কিছুর সমাধান চলে আসবে। এই ধারনাকে কগনিটিভ ডিস্টরশন (cognitive distortions) বলে।
cognitive distortions এ মানুষের চিন্তা-ভাবনা তার অতীতের অভিজ্ঞতা, পারিবারিক শিক্ষা, ধর্মীয় বোধ, নেতিবাচক চিন্তা ইত্যাদি দিয়ে প্রভাবিত থাকে। এই সমস্যায় ভোগা মানুষেরা সঠিক সিদ্বান্ত নিতে পারে না। এমনকি যে কোন ঘটনার বিচারক হিসেবেও এরা খুব আপত্তিকর সিদ্বান্ত দেয়।
ধর্ষনের যে সাইকোলজিকাল কারন আছে তার মধ্যে এই cognitive distortions একটি। একজন ধর্ষক বা সম্ভাব্য ধর্ষকও এই cognitive distortions এ ভোগে। সে মনে করে নারীর উপর বল প্রয়োগ করা তার সহজাত অধিকার, নারীটি খারাপ প্রকৃতির, তার থেকে দূর্বল, সে পাপী, অবলা ইত্যাদি।
পৃথিবীর আর কোন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের কোথাও ধর্ষন হয় না এই ধারনাটাও ভুল। সৌদিতে বাংলাদেশ থেকে যে সকল গৃহকর্মী যায়, তাদের বেশিরভাগের সাথে কি ঘটে আমরা সেটা জানি। আপনি শুধু গুগল করুন। আমি সেই পরিসংখ্যান দিয়ে এই আলোচনা দীর্ঘায়িত করতে চাই না। সেখানে কিন্তু শরীয়া আইন আছে। তারপরেও অপরাধ সংঘটিত হয়।
পরিসংখ্যানের কিন্তু মজার একটা দিক আছে। কোন অপরাধ সংঘটিত হবার পর যদি তা রিপোর্ট করা না হয়, তবে তা পরিসংখ্যানের আওতাভুক্ত হয় না। কোন দেশে ধর্ষনের পরিসংখ্যান কম, এর মানে কিন্তু সেখানে ধর্ষন হয় না এমনটা না। বরঞ্চ আপনি ধরে নিতে পারেন সেখানে ধর্ষন প্রমান করা কঠিন বা অপরাধের লিপিবদ্ধতা নেই।
ধর্ষিত না হয়েও ধর্ষনের মামলা করার নজীর আমাদের দেশে অনেক আছে। তাই হুট করে যদি আমি বলে ফেলি ধর্ষনের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে এবং তা ৯০ দিনের মধ্যেই কার্যকর করতে হবে তবে আমি cognitive distortions এর মধ্যে পড়ে যাবো। তদন্ত ৯০ দিনের মধ্যে করতে হবে এই দাবি যৌক্তিক। এর থেকে আগে করা গেলে আরো ভালো। কিন্তু ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট এর জন্য এটাকে জায়েজ করা হলে, যদি একজন নিরপরাধও ভুলক্রমে মৃত্যুদণ্ড পায় এবং তা কার্যকর হয়, তবে এর থেকে বড় ব্যর্থতা আইনের জন্য আর নাই।
এবার আছিয়ার কথায় ফেরত আসি। তাকে ধর্ষন করা হয়েছে এটা একটা অপরাধ, সে একজন মাইনর (শিশু) ছিল, এটা দ্বিতীয় আরেকটা অপরাধ। এরপর সে হাসপাতালে মারা যায়, তিন নম্বর অপরাধ মানে তাকে খুন করা হয়েছে। এখানে রাষ্ট্র চাইলেই এই তিন মামলার একটিতে অপরাধীকে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট দিতে পারে। কোনটির জন্য দেবে সেটা কি বুঝতে পারছেন?
রেইপ কি আমেরিকায় হয়? সেখানেতো আইন অনেক কড়া। তাহলে?
হ্যাঁ, সেখানেও রেইপ হয়। জনসংখ্যার পরিমান আর রিপোর্টেড কেইস হিস্ট্রির পরিসংখ্যানে হয়ত আমাদের থেকেও বেশি। কারন অপরাধ হলে তারা রিপোর্ট করার চেষ্টা করে। কিন্তু সেখানে একটা অদ্ভুত বিষয় আছে, তাদের আইনে পটেনশিয়াল রেইপিস্ট এবং চাইল্ড এবিউজারদের শাস্তির ব্যবস্থা আছে। মাঝেমধ্যেই তাদের Child Protection Services (CPS) সাঁড়াশি অভিযান চালায় এই সকল কালপ্রিটদের ঘটনা ঘটার আগেই ধরার জন্য।
আমি যতদূর জানি, আমেরিকান জেলে চাইল্ড এবিউজরাদের সবচেয়ে নিকৃষ্ট চোখে দেখে বাকি অপরাধীরা। এবং সুযোগ পেলেই তাদের সাথে ওই কাজটা করে, যেটা তারা একটা বাচ্চার সাথে করেছে বা করতে চেয়েছে।
আমার লেখার প্রথমদিকে উল্যেখিত ব্যাক্তিকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম, আপনি কি রাস্তায় কাউকে একা পেলে ধর্ষন করবেন? সে মাথা নেড়ে না বলেছিল। সে এই শিক্ষা পায়নি এবং এটা অনৈতিক সে দাবি করেছিল। আমি তখন তাকে বললাম, তাহলে একবার চিন্তা করুন আপনি কেন এই খারাপ কাজ করবেন না, আর ওই রেপিস্ট কেন করছে? সমস্যাটা খুঁজে বের করুন। নয়ত শরীয়া আইন, বা মৃত্যুদণ্ড কোনটাই কাজে আসবে না।
আমাদের বাংলাদেশী পুরুষেরা যে মানসিকতায় বড় হয়, তাদের বড় একটা অংশই পটেনশিয়াল রেইপিস্ট। নয়ত কোনভাবেই তারা ধর্ষনের মত একটা খারাপ কাজকে জায়েজ করতে পারে না। আপনি নিশ্চই শুনেছেন ধর্মবেত্তারা বলে বেড়ায় মাহরাম ছাড়া নারী বাইরে গিয়েছে কেন? মেয়েটা হয়ত ঠিকমত পর্দা করেনি, তার চলাচল খুব শ্লীল ছিল না, ইত্যাদি।
মোরাল পুলিশিং এর দোহাই দিয়ে এরা অপরিচিত নারীকে মাথায় কাপড় দিতে বলে, ওড়না বুকের উপর টেনে দিতে বলে, রাতে একা বের হয়েছে কেন এ ধরনের উদ্ভট প্রশ্ন করে। এদের সবাই পটেনশিয়াল রেপিস্ট। আপনি কোনভাবেই আরেকজনের ব্যাক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।
ব্যক্তি স্বাধীনতার সীমা কতটুকু? যতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করলে রাষ্ট্রীয় কোন আইন (পেনাল কোড) লঙ্গিত হবে না, ঠিক ততটুক। এর কোন সীমা নেই। যতক্ষন পর্যন্ত না একজন ব্যক্তি রাষ্ট্রের কোন আইন ভংগ করে ততক্ষণ পর্যন্ত তার পোষাক, চলাফেরা, খাবার গ্রহন, মনোরঞ্জন, কথা বলা বা লিখা ইত্যাদি বিষয়ে বাধা দেয়া যাবে না। একটা মেয়ে যদি ওড়না বাদে হেঁটে যায় আপনার কোন অধিকার নেই তাকে ওড়না পরার শিক্ষা দেবার। তেমনি কেউ যদি হিজাব পরে হাঁটে, আপনার কোন অধিকার নেই তাকে হিজাব খুলতে বলার। কোন ভাবেই আপনি অন্যকারো ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন না, এটা দন্ডনীয় অপরাধ।
এরপর আমি আড্ডা দিতে গেলাম কয়েকজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের সাথে। এদের কয়েকজন সরকারি চাকুরি করেন। এদের একজন হুট করে বলে বসলেন, আছিয়াকে অনেক সম্মান দিয়েছে রাষ্ট্র। আমি জানতে চাইলাম, কিভাবে? তিনি বললেন, এই যে তাকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হল। আমি প্রচন্ড বিতৃষ্ণায় বললাম, এইরকম সম্মান এই মেয়েটার কোন দরকার ছিলো না। যে পদ্ধতিতে মেয়েটা মারা গেছে সেটা খুব বেদনাদায়ক। আপনার কাছে কেন মনে হল তাকে খুব সম্মান দেয়া হয়েছে?
আমি এই লোকের চেহারা আর কোনদিন দেখতে চাই না। তার চিন্তা-ভাবনা খুব স্থুল। তিনি যদি ধর্ষকের বিরুদ্ধে কিছু গালি দিতেন বা মৃত্যুদণ্ড দাবি করতেন তাও কিছুটা সম্মান আমি তার জন্য জমা রাখতে পারতাম। এই ভদ্রলোককে আমি পরবর্তী প্রশ্ন করেছিলাম যদি রাস্তা দিয়ে একটা সুন্দর মেয়ে হেঁটে যায়, দেখতে খুব স্মার্ট এবং টাইট জিন্স বা টি-শার্ট পরা থাকে, তবে আপনার কি সাহস হবে তার সাথে গিয়ে কথা বলার বা বন্ধুত্ব করার? তিনি জানালেন "না।" এরকম মেয়ের সাথে কথা বলার সাহস তার হবে না।
বললাম, যার সাথে কথা বলার সাহস হবে না, তাকে রেইপ করার বা জোর করার সাহসও আপনার হবে না। তার মানে যে সকল মেয়েরা ড্যাম কেয়ার ভাবে চলাফেরা করে এই সকল পটেনশিয়াল রেপিস্টরা তাদের শিকার করতে যায় না। তারা সবসময় খুঁজে বেড়ায় দূর্বল এবং অর্থনৈতিক ভাবে অস্বচ্ছল মেয়েদের। কারন আমাদের দেশে আইনের অধিকার পাবার জন্য আপনাকে টাকা খরচ করতে হবে। এবং এই সকল রেপিস্টরা জানে আইন তারা কিনতে পারবে কোন না কোন ভাবে।
আমরা জানি সমস্যাটা কোথায়। কিন্তু শুধু মলম লাগিয়ে তার সমাধান চাইছি। সমস্যা বাঙ্গালীর মানসিকতায়। যে মাইন্ডসেট নিয়ে বাঙ্গালী পরিবারে একটা ছেলে বেড়ে ওঠে, সে মেয়েদেরকে শুধুই সম্ভোগের পন্য, কিংবা ঘরে বন্দি আত্মা হিসেবে দেখে, সে রাস্তায় তার থেকে স্মার্ট সুদর্শনা কাউকে দেখলে আপত্তি তুলবেই। কখনো ভীড়ের মাঝে তার গায়ে হাত দেবে, বাসে জায়গা থাকলেও গা ঘেঁষে বসার চেষ্টা করবে। অফিসে কলিগ হলে বাজে মন্তব্য ছুড়ে দেবে। কারন এইগুলো তাকে ছোট থেকে শেখানো হয়েছে।
বিপরীত লিঙ্গের প্রতি সম্মান প্রদর্শন আমাদের সংস্কৃতির অংশ হতে পারেনি। যদি হত তবে আমরা মোর্যাল পুলিশিং দেখতে পেতাম না। মেয়েদের কখনো তেতুলের মত, ঢাকনা না দেয়া দুধের মত ইত্যকার নানা বিশেষনে বিশেষায়িত করা হতনা।
ব্যাপারটা অনেকটা এরকম, কেউ ছিনতাইয়ের শিকার হবার পর তাকে বলা, তুমি টাকা পকেটে নিয়ে একা একা বের হয়েছো কেন, তোমার সাথে গার্ড নেই কেন? ছিনতাইকারীতো ছিনতাই করবেই...। এরা অপরাধকে জায়েজ করার চেষ্টা করছে ভিক্টিম ব্লেইমিং করে।
পোষাকের স্বাধীনতার কথায় একটা কথা মনে পড়ে গেল, আমাদের স্কুলে কিন্তু বাচ্চাদের পোষাকের স্বাধীনতা নেই। সেখানে তাকে নির্দিষ্ট একটা ড্রেস পরে যেতে হয়। আর্মিতে নেই, পুলিশে নেই - সেখানেও তাদের জন্য নির্দিষ্ট একটা ইউনিফর্ম ঠিক করা থাকে।
ধর্মেও কিন্তু এই স্বাধীনতা নেই। সেখানেও কিন্তু একটা নির্দিষ্ট ধরনের পোষাক পরিধান না করলে আপনাকে হেনস্থা হতে হবে। আপনাকে আগে থেকেই বলে দেয়া হয়েছে এই ধরনের পোষাক না পরলে আপনি খারাপ। শাস্তির পরিমান লঘু বা গুরু হতে পারে। নির্ভর করে আপনি অর্থনৈতিকভাবে কতটা স্বচ্ছল তার উপর।
---
শিশুরা ৯৯ ভাগ ক্ষেত্রেই এবিউজের শিকার হয় তাদের পরিচিত পরিজন দ্বারা। প্রথমত, শিশুরা দূর্বল, এরা প্রতিবাদ করার ক্ষমতা রাখে না, এবং দ্বিতীয়ত, তারা মনে করে সম্মানের ভয়ে শিশুর পরিবার অভিযোগ দায়ের করবে না। চাইল্ড এবিউজের তালিকায় কিন্তু ছেলে শিশুরাও আছে। আমি খুব করে আমার পরিচিত সবাইকে বলে দেই, নিজের বাচ্চাকে যেন চাচা, ফুপু, খালা-খালু, কাজিন এদের সাথে একা একা ছেড়ে না দেন। বিশেষ করে বৃহৎ ফ্যামিলিতে মায়েদের এই দিকে নজর দিতে হবে। কোন একটা লেখায় আমি পড়েছিলাম ছেলে শিশুরা তাদের প্রথম যৌনতা শেখে পরিবারের খালা, ফুপু এদের কাছ থেকে। তখন এই কথাটার মানে আমি হুট করে ধরতে পারিনি। এখন কিছুটা বুঝি।
আপনার বাচ্চাকে কারো কোলে বসতে দেবেন না, চুমু খেতে দেবেন না - এই অভ্যাসটা ছোটবেলা থেকেই করবেন।
একদিনে আমাদের সমাজ বদলে যাবে কিছু আইনের মারপ্যাঁচে পড়ে একথা আমি বিশ্বাস করি না। আমাদের সমাজ পুরুষতান্ত্রিক, আমাদের ধর্মও তাই। এখানে আইন যারা বানিয়েছেন, ধর্ম প্রচারক যারা আছেন সবাই পুরুষ। নারীদের জন্য নারীরা আইন বানায়নি। নারীরা কিভাবে চলবে, কি পরবে, কি খাবে সেই স্বাধীনতা তাদের দেয়া হয়নি। পুরুষেরা যেভাবে নারীদের দেখতে চেয়েছে, রাখতে চেয়েছে, আইন এবং ধর্ম সেভাবেই সাজানো হয়েছে।
----
নোটঃ আমাকে নারীবাদী ভাবার কারন নেই। আমার অন্যান্য লেখা পড়লে আপনি হয়ত জানতেন আমি নারী-পুরুষের সমতায় বিশ্বাস করি না। পৃথিবীতে এরা একে অপরের প্রতিযোগী নয় বরঞ্চ সহযোগী। যে কাজ পুরুষ করতে পারবে তা নারীও করতে পারবে এটা আমি যৌক্তিকভাবে বিশ্বাস করি না। সমাজে দুই দলের কাজ ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু কেউ কারো দাস নয়। Equality এর চেয়ে সমাজে Equity এর বেশি প্রয়োজন।