পোস্টগুলি
এই বৃষ্টি
প্রতিদিনসকাল থেকেই ধুমাইয়া বৃষ্টি পড়তেসে। কালকে রাতেই ভাবছিলাম, আগের মত সারাদিন বৃষ্টি পড়বে এরকম দিন ঢাকায় খুব একটা দেখছি না। সকালেই ইচ্ছা পূরণ।
বৃষ্টির শব্দ আমার খুব পছন্দের। আশেপাশে টিনের চাল নেই। তবে কংক্রিটের উপর আলাদা একরকম বাজনা বাজছে। এটাও মন্দ না। আমার বারান্দায় আকাশের একটা ডিশ লাগানো আছে। সেখানে নিয়মিত লয়ে টুং টাং শব্দ হচ্ছে।
হঠাৎ মনে পড়ল, আজকে তবে রিকশাওয়ালাদের ঈদের দিন। ঢাকা পানির নিচে খুব দ্রুতই চলে যায়। এতে তাদের ব্যবসা বাড়ে। আমার কি? আমারতো চাকরি নাই, কোথাও যাবার তাড়া নাই :)
পরক্ষনেই মনে পড়ল, আজকে শুক্রবার, কারোই খুব তাড়া নাই। অন্যদিন নিজে সকালে চা বানাই না। আজকে মনে হলো, এইরকম বৃষ্টিতে চা মন্দ না। যদিও আমার চা রেডিমেড। খাবারের ব্যপারে আমি খুব কৃচ্ছতা বজায় রাখি।
আমার বারান্দা আর জানালা দিয়ে একটুকরো আকাশ সবসময়ই দেখা যায়। তাই দেখছি আর এক কাপ চা। ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যালেক্সা চিৎকার করছে,
"চার চার চৌকো জানালায়
আমায় দেখে হাতটা বাড়ায়
আকাশ দেখে দিচ্ছি ছুট
মাথার ভেতর শব্দজট..."
জীবনের এই ছোট ছোট সময়গুলো খুব আনন্দের। আমি রুমের ফ্যান-লাইট সব বন্ধ করে দিয়ে বৃষ্টির শব্দ শুনছি। শব্দজট কাটানোর চেষ্টা করছি। অনেকদিন হলো গল্পে ফিরতে পারছিনা। গালভরা নামে এটাকে "Writer's Block" বলে। কিন্তু আমার পছন্দ "শব্দজট"।
জীবন দর্শন -৩
জীবন দর্শনসংসারে যে জিনিসটা সবথেকে বেশি প্রয়োজন সেটা হচ্ছে একে অপরের প্রতি সম্মান। ভালোবাসা খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায় যদি সম্মান না থাকে।
পুরুষ এবং নারী কখনই একে অপরের সমকক্ষ বা প্রতিযোগী নয়। মিলিয়ন বছরের অভিযোজনে মানব সমাজে পুরষের দায়িত্ব এবং নারীর দায়িত্ব আলাদা। তাদের কর্মক্ষেত্রও আলাদা।
জগতের সকল জীবের একমাত্র লক্ষ্য বংশ বিস্তার করে সবচেয়ে সেরা প্রজাতি তৈরি করা। একারনেই শক্ত সমর্থ, বলশালী পুরুষ এবং সুন্দরী নারীরা বিয়ের বাজারে অগ্রগন্য। এটা প্রকৃতির নিয়ম। মানুষ নানা গল্প বানায় আর বিশ্বাস করে এই সত্যকে লুকিয়ে রাখার জন্য।
সঙ্গী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় প্রাচীনকালে এই পরীক্ষায় সবার আগে থাকত দক্ষ শিকারীরা। কারন তারা খাদ্যের যোগান আর নিরাপত্তা দিতে পারত। তারপরের যুগে বিজয়ী যোদ্ধারা। ক্ষমতাশালী রাজারা অনেক পত্নী এবং উপপত্নী গ্রহন করতেন।
সভ্যতা অনেক এগিয়েছে, এখন নায়ক-নায়িকারা চাহিদার শীর্ষে, সবার আগে অগ্রগণ্য হন এথলেটরা। ভালো ফুটবলার এবং ক্রিকেটারকে ঠিক এই প্রাকৃতিক কারনেই নারীরা খুব পছন্দ করে। পুরোটাই জৈবিক, বংশবিস্তারের আদিম জীনগত তাড়না।
শারীরিক ক্ষমতা কম হলেও, অর্থের ক্ষমতা মানুষকে একইরকম ভাবে বংশবিস্তারের ক্ষেত্রে আকর্ষনীয় করে তোলে। সবকিছুর মূলেই বংশবিস্তারের প্রাকৃতিক ইচ্ছা।
কবি সাহিত্যিকরা এই প্রাকৃতিক ধারায় অনেক পেছনে পড়ে। তাদের না থাকে অর্থ, না আছে ক্ষমতা। বলশালী এবং সুন্দর না হলেও তারা বাকপটু হন। তারা আবেগকে কাজে লাগান সঙ্গী নির্বাচন প্রক্রিয়ায়।
প্রকৃতিতে ফুল যেমন আপনাকে বিমোহিত করার জন্য ফোটে না। সে তার বংশ বিস্তারের ধারা অব্যাহত রাখার জন্যই নানা রঙে নিজেকে সাজায়। পাখিরাও একই কারনে মধুর সুরে ডাকে। জগতের মোদ্দা কথা টিকে থাকা এবং সেরা সঙ্গী নির্বাচন করে আগের প্রজন্মের যে শারীরিক সমস্যা থাকে তা কাটিয়ে ওঠা।
আজকের কোন প্রজাতিই একবারে আসেনি এই পর্যায়ে। ট্রায়াল এন্ড এরর এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে সবাইকে। সেরা বলে কিছু নেই এবং নিখুঁত বলেও না।
জীবন দর্শন-২
জীবন দর্শন
বিশ্বাস একটা কাল্পনিক বিষয়, তুমি কোনভাবেই একে প্রমান করতে পারবে না। প্রমানযোগ্য বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করার দরকার নেই।
জীবন দর্শন-১
জীবন দর্শন
যে তোমার মতামত গ্রহন করে না, তার কোন কিছুর দায়ভার গ্রহন করতে তুমি বাধ্য নও।
বারবার ক্ষমা করে দেয়াটা দূর্বলতার লক্ষন।
ভালোবাসা চিরদিন একই রকম থাকে না। তরল পদার্থের মত সময়ের সাথে সাথে সে আকৃতি বদলায়। কাউকে অবহেলা করার আগে দশবার চিন্তা করবে।
একশ দিন ভালো ব্যবহার করো, মানুষ সেটা মনে রাখবে না। একদিন খারাপ ব্যবহার করো, সেটাই তোমার পরিচয়। একারনেই নিপাট ভদ্রলোক হয়ে ওঠা হয় না আমার।
কবি অথবা কাক?
কবিতার কথানিলির ভালোবাসা
বইআমি সায়েন্স ফিকশনের পাঁড় ভক্ত। ছোটবেলা থেকেই পড়ে আসছি।
সদ্য শেষ করলাম "মোশতাক আহমেদের" - নিলির ভালোবাসা - নামের একটা সায়েন্স ফিকশন।
খুবই আশাহত হলাম। ভদ্রলোক নাকি খুব নামকরা লেখক। কিন্তু এটাকে ঠিক সায়েন্স ফিকশন না বলে একটা চিত্রনাট্য বললে ভাল হয়। কোন বিশেষ রহস্য নেই। একজন পৃথিবীর মানুষ এবং আরেকজন ভিন গ্রহের নীল রঙের মেয়ের ভালোবাসার মিনমিনে গল্প।
অহেতুক অনেক বর্ননা। বইটা বেশ বড়, কিন্তু মূল উপদান শূন্য।
বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর কোন চটক নেই। অহেতুক কিছু টাকা খরচ করে বইটা কিনলাম।
কবিতা হঠাৎ করে মনে পড়ে
কবিতার কথাপুষ্প আপনার জন্য ফোটে না
ভাবনাআমার মনে হয় এই কথাটা অনেক কবি সাহিত্যিকই বলে গেছেন।
আবেগেময় কথা। জগতে যা কিছু ঘটে তা নির্দিষ্ট কার্য কারনেই ঘটে। মানুষ যেমন তার বংশ বিস্তারের জন্য সবথেকে সুন্দরী নারী বা শক্তিশালী পুরুষ খোঁজে, তেমন সকল প্রানি এবং উদ্ভিদকুলেও ঘটে।
ফুল নিজের বংশ বিস্তারের জন্যই প্রকৃতিতে নিজেকে সাজায়। মানুষকেও আকৃষ্ট করে একারনেই। যে ফল আপনি খান আর যে ফুলের গন্ধে বিমোহিত হয়ে কবিতা লেখেন, তা শুধু মাত্র গাছের পরাগায়ণে এবং বংশ বিস্তারে সাহায্য করার জন্যই তৈরি হয়।
পুষ্প নিজের জন্যই ফোটে। পুরো পৃথিবীর বাস্তুসংস্থান এভাবেই চলে।
প্রানী হত্যা মহাপাপ, এটা কোন কোন ধর্মে থাকলেও বাস্তুসংস্থানে এর কোন ঠাঁই নেই। খাদ্য শৃঙ্খলের কে কাকে মারবে এবং খাবে সেটা কোটি কোটি বছরের "ইভোলিউশন" ইতিমধ্যে ঠিক করে দিয়েছে।
আমরা মানুষ হিসেবে প্রানী প্রেমীও নই। আমাদের প্রানী প্রেম খুব "সিলেক্টিভ"। আমরা বেড়াল, ঘোড়া এসব খাই না। কেউ কেউ হয়ত খায়। কিন্তু ছাগল, গরু, মহিষ, মুরগী, পাখি ইত্যাদি দেদারসে হত্যা করি এবং খাই। এটাই স্বাভাবিক।
খাদ্য শৃঙ্খলে আমরা সর্বভূক।
জগতটাই টিকে আছে Survival of the fittest এর নীতিতে। মানুষ সেই ফিটনেস এর বিচারে সব থেকে smartest ও বটে।
ভাবনার শুরুটা এখানেই
ভাবনাLegacy বলতে কিছু নেই। আমরা আসলে কিছু রেখে যেতে পারি না। আমাদের মৃত্যুর সাথে সাথেই আমাদের গল্পগুলো শেষ হয়ে যায়।
আমাদের সন্তানেরা আমাদের থেকে সম্পূর্ন আলাদা রকমের মানুষ। আমাদের কোন কিছু তারা বহন করে নিয়ে যাবে সেরকমটা হয় না।
আপনার যা অর্জন তা আপনার একান্তই নিজস্ব। বিজ্ঞানীর ছেলেও যদি বিজ্ঞানীও হয়, তবে সেটা তার একান্তই নিজের চেষ্টায়।
অহেতুক বিশাল সম্পদ অর্জন করতে গিয়ে নিজের ছোট্ট জীবনকে উপভোগ না করতে পারাটা তাই মূর্খতা।
অনেক রাজার ছেলেও শেষ পর্যন্ত রাজা হতে পারেনি। অনেক বিশাল সাম্রাজ্য অচিরেই ডুবে গেছে ইতিহাসের পাতায়।
তাই আপনি বংশধর না রেখে গেলে পৃথিবীর কোন অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে না।
যা করছেন নিজের জন্যই করছেন।
বেঁচে থাকাটা উপভোগ করতে শিখুন।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ