পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কোটার খোঁটা এবং আমরা

সারা দেশে ইন্টারনেট নাই এর আজ তৃতীয় দিন। প্রথম দুই দিন আনন্দে কাটলেও এখন হতাশ হয়ে যাচ্ছি। আমার জীবিকার পুরোটাই ইন্টারনেট নির্ভর। আমার ক্ষুদ্র ব্যবসার উপর নির্ভর করে বাইরের দেশের অন্তত ৩ টা কোম্পানি। তাদের সাথে যোগাযোগের কোন পদ্ধতি পাচ্ছি না। সার্ভারে কোন জটিল ঝামেলা হলে আমার ব্যবসার "লালবাত্তি"।

কি করব কিছু বুঝে পাচ্ছি না। বিচার জানানোর কেউ নেই। আমার মত আরো আট দশ লাখ অনলাইন প্রফেশনাল সবাই মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি। 

সারা দেশের ইন্টারনেট একযোগে বন্ধ থাকাটা কত হাজার কোটি টাকার ক্ষতি সেটা কি কেউ গুনে দেখবে?
এই লেখাটা যখন লিখছি তখনও ইন্টারনেট নাই, বাইরে কারফিউ চলছে। ড্রাফটে তুলে রেখেছি পরে পাবলিশ করব এই জন্য।

২৪.০৭.২০২৪

ইন্টারনেট ফেরত এসেছে, আশার বিষয়। তবে পুরোদমে নয়। খুবই মন্থর গতিতে। এখন কিছু বিষয়ের বিশ্লেষন করা যাক। আমরা যারা ঘরে বসেই মোটামুটি আমাদের সবকিছু করি, জীবিকার জন্য নির্ভর করি ইন্টারনেটের উপর তাদের গত কয়েকদিন বেশ উৎকন্ঠায় গিয়েছে। কারন আমাদের যে কোন কাজই সময় নির্ভর। ঠিক সময় মত কাজ ডেলিভার করতে না পারলে সে ক্ষতি আদতে আর পুষিয়ে ওঠা যায় না।

আমরা চাই, দেশে সবসময় একটা শান্ত অবস্থা বিরাজ করুক, দূর্নীতি না থাকুক। অশান্তি কোন কাজের নয়। এই দেশ ইতিমধ্যেই স্বাধীন, একে নতুন করে স্বাধীন করার কিছু নেই। আমাদের দরকার সুশাসন যথাসম্ভব প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টায় থাকা।

কোন কালেই দেশের শাসক গোষ্ঠী জনগনের পছন্দের তালিকায় ছিলনা, এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। এটা ধ্রুব সত্য। আমরা বড়জোর অন্যদেশের সাথে তুলনা করতে পারি। আবার সেখানে গেলেও দেখা যাবে তাদের সরকারও জনগনের সব আশা পূরন করতে পারছে না।

এখন আসি যৌক্তিক কথায়। কোটা প্রথা কি যৌক্তিক? এক কথায় উত্তর "না"। কোটা প্রথা বাতিলের আন্দোলন তাই খুবই যৌক্তিক একটা আন্দোলন। আমার মনে হয় বুদ্ধিমান যেকোন মানুষই চাইবেন দেশে মেধার বিকাশ ঘটুক।

রাস্তায় আন্দোলনের নামে ভাঙচুর করা কি যৌক্তিক? উত্তর হল "না"। কিন্তু আমাদের দেশের সমস্যা হচ্ছে রাস্তায় না নামলে কোন দাবি আদায় করা যায় না। 
 
একটা অসম্ভব রকম বৈষম্য নিয়ে দেশের সরকারি চাকুরি নিয়োগ ব্যবস্থা চলছিল। সেটার অবসান হয়েছে। মনে শান্তি পাচ্ছি। আমি নিজে কখনো চাকুরি করিনি। চাকরি জিনিসটাই আমার কাছে অসহ্য লাগে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার আগেই ঠিক করে ফেলেছিলাম কি করব, কিভাবে জীবন কাটাব। আমি পড়েছি আনন্দের জন্য।

আমাদের দেশে হাজারো বেকার তরুন শুধুমাত্র সঠিক শিক্ষার পরিবেশের অভাবের কারনে জানেনা তাদের ভবিষ্যত কি? সেখানে এরকম একটা আন্দোলন যে হবেই সেটা জানা কথা।

কোটা আন্দোলন নিয়ে জলঘোলা এবারই নতুন নয়। ২০১৮ তেও এর ফায়দা লুটেছিল কিছু লোক। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দেশজুড়ে চরম অরাজকতা শুরু করার আগেই সরকার তাই হার্ড লাইনে চলে গেলো।

কিন্তু আরেকটু ভালোভাবে শেষ হতে পারত ব্যপারটা। যাদের সন্তান মারা গেলো পুলিশের সাথে মারামারি করতে গিয়ে, এই মেধারা ফিরে আসবে না।

আপনি শুধু চোখ বন্ধ করে একবার চিন্তা করেন, একটা দেশ, যেখানে মেধার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতার সমতা আনার জন্য রাজপথে রক্ত ঝরে। সরকারের কি অনেক আগেই উচিৎ ছিলনা এই ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলন মেনে নেয়া?

ইতিহাস বলে, এদেশে ছাত্রদের বিরুদ্ধে গিয়ে কোন সরকারই আজ পর্যন্ত সুবিধা করতে পারেনি। আফসোসের বিষয় কেউ ইতিহাসের শিক্ষা মনে রাখে না।

সময়, মানুষের জীবন এবং সম্পদের কি নিদারুণ অপচয়।
 
------

ছাত্র রাজনীতি নিয়ে আমাদের আবারও ভাবার সময় হয়েছে। যে বড় বড় আন্দোলনগুলো ছাত্ররা করেছে সেগুলো কোন রাজনৈতিক ব্যানারে পরিচালিত হয়নি। এরা নিজেরাই যৌক্তিক ভাবে একত্রিত হয়েছে। ছাত্রদের আন্দোলন করার জন্য কোন ধরনের রাজনৈতিক পরিচয় লাগে না। বরঞ্চ এর উল্টোটা সত্য। রাজনৈতিক দলগুলোর দরকার হয় ছাত্রদের মেধার অথবা পেশী শক্তির।

আমাদের শিক্ষাঙ্গন পেশী শক্তি দেখানোর জায়গা নয়। তাদের কোন দরকার নেই ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি করবার। দেশের যেকোন প্রয়োজনে তারা এমনিতেই সংঘবদ্ধ হতে পারে।

গত পনের বছর ধরে আওয়ামীলীগ যদি শাসনে থাকে, তবে বিচক্ষন হতে সমস্যা কোথায় ছিলো? এই যে ছাত্ররা মরল, এত জ্বালাও-পোড়াও চলল, দেশে আর্মি নামাতে হল - এর সবগুলোই কিন্তু আওয়ামীলীগের খাতায় লেখা হয়ে থাকবে।

দেশে গণতন্ত্রের নামে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আছে। এর কারনও কিন্তু আগের সরকারগুলোর চরম ব্যর্থতা। সেখান থেকেই কি আওয়ামীলীগ শিক্ষা নিতে পারত না?

ইন্টারনেটে প্রচুর গুজব ছড়াবে একদল, কারন ক্ষমতাসীনদের যে কোনভাবে নাস্তানাবুদ করাটাই তাদের কাজ। কিন্তু এই জন্য যদি ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে বসে থাকতে হয়, তবে সেই গুজব জনমনে পাকাপাকি বসে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ ভীতি এবং গুজবের বিরুদ্ধে কাজ করে সবসময়। সেটা আটকে দিয়ে স্বৈরাচারী তকমা গায়ে লাগাবার কি দরকার?
 
ব্যাধিই সংক্রামক, স্বাস্থ্য নয়। - এ বিষয়টা মাথায় রাখি সর্বদা।

আমি খুব অবাক হয়ে দেখলাম, দেশের বাইরে যে সকল শ্রমিক যাচ্ছে, তারা সবথেকে বেশি গুজব ছড়ায় ফেইসবুকে এসে। এরা অশিক্ষিত আমি সেটা মেনে নিচ্ছি, কিন্তু সরকারেরও কি দরকার ছিল না একটা শক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে গুজবের জবাব দেয়া যায়?

একটা যোক্তিক দাবিকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে দেশে সেটা কোনভাবেই আমাদের কারো কাম্য নয়।

এই বৃষ্টি

সকাল থেকেই ধুমাইয়া বৃষ্টি পড়তেসে। কালকে রাতেই ভাবছিলাম, আগের মত সারাদিন বৃষ্টি পড়বে এরকম দিন ঢাকায় খুব একটা দেখছি না। সকালেই ইচ্ছা পূরণ।

বৃষ্টির শব্দ আমার খুব পছন্দের। আশেপাশে টিনের চাল নেই। তবে কংক্রিটের উপর আলাদা একরকম বাজনা বাজছে। এটাও মন্দ না। আমার বারান্দায় আকাশের একটা ডিশ লাগানো আছে। সেখানে নিয়মিত লয়ে টুং টাং শব্দ হচ্ছে।

হঠাৎ মনে পড়ল, আজকে তবে রিকশাওয়ালাদের ঈদের দিন। ঢাকা পানির নিচে খুব দ্রুতই চলে যায়। এতে তাদের ব্যবসা বাড়ে। আমার কি? আমারতো চাকরি নাই, কোথাও যাবার তাড়া নাই :)

পরক্ষনেই মনে পড়ল, আজকে শুক্রবার, কারোই খুব তাড়া নাই। অন্যদিন নিজে সকালে চা বানাই না। আজকে মনে হলো, এইরকম বৃষ্টিতে চা মন্দ না। যদিও আমার চা রেডিমেড। খাবারের ব্যপারে আমি খুব কৃচ্ছতা বজায় রাখি।

আমার বারান্দা আর জানালা দিয়ে একটুকরো আকাশ সবসময়ই দেখা যায়। তাই দেখছি আর এক কাপ চা। ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যালেক্সা চিৎকার করছে,

"চার চার চৌকো জানালায়
আমায় দেখে হাতটা বাড়ায়
আকাশ দেখে দিচ্ছি ছুট
মাথার ভেতর শব্দজট..."

জীবনের এই ছোট ছোট সময়গুলো খুব আনন্দের। আমি রুমের ফ্যান-লাইট সব বন্ধ করে দিয়ে বৃষ্টির শব্দ শুনছি। শব্দজট কাটানোর চেষ্টা করছি। অনেকদিন হলো গল্পে ফিরতে পারছিনা। গালভরা নামে এটাকে "Writer's Block" বলে। কিন্তু আমার পছন্দ "শব্দজট"।


 


জীবন দর্শন -৩

সংসারে যে জিনিসটা সবথেকে বেশি প্রয়োজন সেটা হচ্ছে একে অপরের প্রতি সম্মান। ভালোবাসা খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায় যদি সম্মান না থাকে।


পুরুষ এবং নারী কখনই একে অপরের সমকক্ষ বা প্রতিযোগী নয়। মিলিয়ন বছরের অভিযোজনে মানব সমাজে পুরষের দায়িত্ব এবং নারীর দায়িত্ব আলাদা। তাদের কর্মক্ষেত্রও আলাদা।


জগতের সকল জীবের একমাত্র লক্ষ্য বংশ বিস্তার করে সবচেয়ে সেরা প্রজাতি তৈরি করা। একারনেই শক্ত সমর্থ, বলশালী পুরুষ এবং সুন্দরী নারীরা বিয়ের বাজারে অগ্রগন্য। এটা প্রকৃতির নিয়ম। মানুষ নানা গল্প বানায় আর বিশ্বাস করে এই সত্যকে লুকিয়ে রাখার জন্য।

সঙ্গী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় প্রাচীনকালে এই পরীক্ষায় সবার আগে থাকত দক্ষ শিকারীরা। কারন তারা খাদ্যের যোগান আর নিরাপত্তা দিতে পারত। তারপরের যুগে বিজয়ী যোদ্ধারা। ক্ষমতাশালী রাজারা অনেক পত্নী এবং উপপত্নী গ্রহন করতেন।

সভ্যতা অনেক এগিয়েছে, এখন নায়ক-নায়িকারা চাহিদার শীর্ষে, সবার আগে অগ্রগণ্য হন এথলেটরা। ভালো ফুটবলার এবং ক্রিকেটারকে ঠিক এই প্রাকৃতিক কারনেই নারীরা খুব পছন্দ করে। পুরোটাই জৈবিক,  বংশবিস্তারের আদিম জীনগত তাড়না।

শারীরিক ক্ষমতা কম হলেও, অর্থের ক্ষমতা মানুষকে একইরকম ভাবে বংশবিস্তারের ক্ষেত্রে আকর্ষনীয় করে তোলে। সবকিছুর মূলেই বংশবিস্তারের প্রাকৃতিক ইচ্ছা।

কবি সাহিত্যিকরা এই প্রাকৃতিক ধারায় অনেক পেছনে পড়ে। তাদের না থাকে অর্থ, না আছে ক্ষমতা। বলশালী এবং সুন্দর না হলেও তারা বাকপটু হন। তারা আবেগকে কাজে লাগান সঙ্গী নির্বাচন প্রক্রিয়ায়।

প্রকৃতিতে ফুল যেমন আপনাকে বিমোহিত করার জন্য ফোটে না। সে তার বংশ বিস্তারের ধারা অব্যাহত রাখার জন্যই নানা রঙে নিজেকে সাজায়। পাখিরাও একই কারনে মধুর সুরে ডাকে। জগতের মোদ্দা কথা টিকে থাকা এবং সেরা সঙ্গী নির্বাচন করে আগের প্রজন্মের যে শারীরিক সমস্যা থাকে তা কাটিয়ে ওঠা।

আজকের কোন প্রজাতিই একবারে আসেনি এই পর্যায়ে। ট্রায়াল এন্ড এরর এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে সবাইকে। সেরা বলে কিছু নেই এবং নিখুঁত বলেও না।

জীবন দর্শন-২

 

বিশ্বাস একটা কাল্পনিক বিষয়, তুমি কোনভাবেই একে প্রমান করতে পারবে না। প্রমানযোগ্য বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করার দরকার নেই।

 


 

জীবন দর্শন-১

 

যে তোমার মতামত গ্রহন করে না, তার কোন কিছুর দায়ভার গ্রহন করতে তুমি বাধ্য নও।

 

বারবার ক্ষমা করে দেয়াটা দূর্বলতার লক্ষন।

 

ভালোবাসা চিরদিন একই রকম থাকে না। তরল পদার্থের মত সময়ের সাথে সাথে সে আকৃতি বদলায়। কাউকে অবহেলা করার আগে দশবার চিন্তা করবে।

 

একশ দিন ভালো ব্যবহার করো, মানুষ সেটা মনে রাখবে না। একদিন খারাপ ব্যবহার করো, সেটাই তোমার পরিচয়। একারনেই নিপাট ভদ্রলোক হয়ে ওঠা হয় না আমার।

কবি অথবা কাক?

অনেক আগে একবার হয়তো হুমায়ূন আহমেদের কোন একটা বইয়ে পড়েছিলাম ঢাকা শহরে কাকের থেকে কবির সংখ্যা বেশি।

আসলেই?

শব্দের পর শব্দ সাজালেই কিন্তু কবিতা হয় না। কবিতা লেখার জন্য একটা ব্যাথা অনুভব করতে হয়। আবার সব ব্যথিত মন আর সব কষ্টের কথাই কবিতা হয়না।

এটা একটা অদ্ভুত সমীকরণ। কেউ কেউ সারা জীবন কবিতা লিখেও কবি হয় না। আর কেউ কেউ একটা লাইন লিখেই মনে আজীবনের জন্য দাগ কেটে যায়।

আমি কবি হতে চাই না। আমি যেটা হতে চাই সেটা হচ্ছে গল্পকার। বিশেষ করে সাইন্স ফিকশন আমার খুবই পছন্দের।

মাথায় নিত্য নতুন আইডিয়া আসে, কিন্তু সেটা গল্পের আকারে রূপ দেয়াটা বেশ কষ্টের।

নিলির ভালোবাসা

আমি সায়েন্স ফিকশনের পাঁড় ভক্ত। ছোটবেলা থেকেই পড়ে আসছি।

সদ্য শেষ করলাম "মোশতাক আহমেদের" - নিলির ভালোবাসা - নামের একটা সায়েন্স ফিকশন।

খুবই আশাহত হলাম। ভদ্রলোক নাকি খুব নামকরা লেখক। কিন্তু এটাকে ঠিক সায়েন্স ফিকশন না বলে একটা চিত্রনাট্য বললে ভাল হয়। কোন বিশেষ রহস্য নেই।  একজন পৃথিবীর মানুষ এবং আরেকজন ভিন গ্রহের নীল রঙের মেয়ের ভালোবাসার মিনমিনে গল্প।

অহেতুক অনেক বর্ননা। বইটা বেশ বড়, কিন্তু মূল উপদান শূন্য।

বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর কোন চটক নেই। অহেতুক কিছু টাকা খরচ করে বইটা কিনলাম। 

নিলির ভালোবাসা

 


কবিতা হঠাৎ করে মনে পড়ে

একটা কবিতার কথা ভাবতেছিলাম মাথায় অল্প কয়েকটা লাইন এসেছে কিন্তু পুরোটা আসছে না, ভাবলাম সেটাই লিখে রাখি। অন্যসময় মনে পড়লে বাকিটা লেখা যাবে।

যেতে যেতে হঠাৎ যদি ফিরে দেখি
পাশে হাঁটার কেউ নেই
ভালো নেই, মন ভালো নেই
পথটা আর চেনা নেই।

আমি অনেকবার পথ হারিয়েছি। গন্তব্য থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছি। জানিনা কোন দৈব বলে ভেংগে পড়ার ঠিক আগে আগেই কোন না কোন এক বন্দরে ভিড়ে গেছি।

পথ চেনা নেই। যাদের সাথে পথে দেখা তারাও এক সময় ছেড়ে চলে যাবে এই ভাবনাটাই প্রতিনিয়ত কুরে কুরে খায়।

পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না

আমার মনে হয় এই কথাটা অনেক কবি সাহিত্যিকই বলে গেছেন।

আবেগেময় কথা। জগতে যা কিছু ঘটে তা নির্দিষ্ট কার্য কারনেই ঘটে। মানুষ যেমন তার বংশ বিস্তারের জন্য সবথেকে সুন্দরী নারী বা শক্তিশালী পুরুষ খোঁজে, তেমন সকল প্রানি এবং উদ্ভিদকুলেও ঘটে।

ফুল নিজের বংশ বিস্তারের জন্যই প্রকৃতিতে নিজেকে সাজায়। মানুষকেও আকৃষ্ট করে একারনেই। যে ফল আপনি খান আর যে ফুলের গন্ধে বিমোহিত হয়ে কবিতা লেখেন, তা শুধু মাত্র গাছের পরাগায়ণে এবং বংশ বিস্তারে সাহায্য করার জন্যই তৈরি হয়।

পুষ্প নিজের জন্যই ফোটে। পুরো পৃথিবীর বাস্তুসংস্থান এভাবেই চলে।

প্রানী হত্যা মহাপাপ, এটা কোন কোন ধর্মে থাকলেও বাস্তুসংস্থানে এর কোন ঠাঁই নেই। খাদ্য শৃঙ্খলের কে কাকে মারবে এবং খাবে সেটা কোটি কোটি বছরের "ইভোলিউশন" ইতিমধ্যে ঠিক করে দিয়েছে।

আমরা মানুষ হিসেবে প্রানী প্রেমীও নই। আমাদের প্রানী প্রেম খুব "সিলেক্টিভ"। আমরা বেড়াল, ঘোড়া এসব খাই না। কেউ কেউ হয়ত খায়। কিন্তু ছাগল, গরু, মহিষ, মুরগী, পাখি ইত্যাদি দেদারসে হত্যা করি এবং খাই। এটাই স্বাভাবিক।

খাদ্য শৃঙ্খলে আমরা সর্বভূক।

জগতটাই টিকে আছে Survival of the fittest এর নীতিতে। মানুষ সেই ফিটনেস এর বিচারে সব থেকে smartest ও বটে।

ভাবনার শুরুটা এখানেই

 Legacy বলতে কিছু নেই। আমরা আসলে কিছু রেখে যেতে পারি না। আমাদের মৃত্যুর সাথে সাথেই আমাদের গল্পগুলো শেষ হয়ে যায়।

আমাদের সন্তানেরা আমাদের থেকে সম্পূর্ন আলাদা রকমের মানুষ। আমাদের কোন কিছু তারা বহন করে নিয়ে যাবে সেরকমটা হয় না। 

আপনার যা অর্জন তা আপনার একান্তই নিজস্ব। বিজ্ঞানীর ছেলেও যদি বিজ্ঞানীও হয়, তবে সেটা তার একান্তই নিজের চেষ্টায়।

অহেতুক বিশাল সম্পদ অর্জন করতে গিয়ে নিজের ছোট্ট জীবনকে উপভোগ না করতে পারাটা তাই মূর্খতা।

অনেক রাজার ছেলেও শেষ পর্যন্ত রাজা হতে পারেনি। অনেক বিশাল সাম্রাজ্য অচিরেই ডুবে গেছে ইতিহাসের পাতায়।

তাই আপনি বংশধর না রেখে গেলে পৃথিবীর কোন অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে না।

যা করছেন নিজের জন্যই করছেন। 

বেঁচে থাকাটা উপভোগ করতে শিখুন।